সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুর:
জাতীয় অর্থনীতি পরিষদ (একনেক) চার বছর আগেই পাস হয়েছে রংপুরের নতুন দুইটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প। ইতিমধ্যেই দরপত্র, কার্যাদেশ দেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে কাজ শুরু হচ্ছে না দুটি বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ। এনিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন নগরবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তবে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ জানায়, বিদ্যালয়টির নকশা জটিলতা, সম্প্রতি জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, নিচু জমিসহ যেসব সমস্যা ছিল, তা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। দ্রতই কাজ শুরু হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি স্কুল প্রকল্পের আওতায় রংপুর নগরীর উত্তম মৌজার হাজিপাড়া পুরনো রেডিও সেন্টারে ‘বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ ও কামালকাছনা মৌজার বোতলায় হবে ‘বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। বিদ্যালয় দুটি নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের আগস্ট মাসে জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। এরপর রংপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণ হওয়া জমি শিক্ষা প্রকৌশলকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয় দুটি স্থাপনের জন্য টেন্ডার আহ্বান শেষে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছেএসএসএল-এসই-এমএ জেভি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। প্রকল্পের কাজ শুরু হবার কথা ছিল চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল। শেষ হবে ৩৬ মাসে। কিন্তু কার্যাদেশ হওয়ার সাত মাস পার হতে চললেও কাজ শুরুই করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লে বাড়তি অর্থ গচ্চা দিতে হবে সরকারকে। প্রকল্প অনুযায়ী প্রতি বিদ্যালয়ের জন্য ২৩ কোটি ১০ লাখ ৮ হাজার ৪৩২ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
নগরীর সাতমাথ বীরভদ্র এলাকার আফজাল পাটোয়ারী বলেন, গত দুই বছর ধরে মেয়েতে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করতে লটারিতে অংশ নিয়েছি, কিন্তুু একবারও নাম ওঠেনি। আশা ছিল সরকারি স্কুলে পড়বে। কিন্তুু তা পূরণ হলো না। এখন একটি বে-সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছি।
মুলাটোল এলাকার মনিরুল ইসলাম মিন্টু নামের এক অভিভাবক জানান, নগরীতে দু’টি সরকারী বিদ্যালয় নির্মার্ণের খবরে আমিসহ রংপুরের শত-মত অভিভাবক খুশি। কিন্তুু বাস্তবায়ন জটিলতার কারণে হতাশ। আমরা চাই দ্রুত বাস্তবায়ন। এতে রংপুরের শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে। নগরীর কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান তুহিন বলেন, রংপুর বরাবরই বঞ্চিত। সারাদেশের অন্যান্য জেলায় এমনকি উপজেলায়ও একাধিক সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। আর রংপুর বিভাগীয় নগরী। এখানে মাত্র দুটি সরকারি বিদ্যালয়। এতে শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে। ধাপ চেকপোস্ট এলাকার শহিদুল ইসলাম ও তাহমিনা বেগম নামের দুই অভিভাবক জানান, ‘তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষায় রংপুর জিলা স্কুলে ২৫০টি আসনের বিপরীতে প্রতি বছর গড়ে দুই হাজারের বেশি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ সংখ্যা দিন দিন আরো বাড়ছে। একই অবস্থা অন্য স্কুলটিতেও। এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে স্কুল প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। যে সমস্যাই হোক সমাধান করতর হবে, স্কুল দুটি চালু করতে হবে।’
এব্যাপারে রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ করে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি দেখছে শিক্ষা প্রকৌশল। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে তারা জানিয়েছে।